মাটির দোতলা বাড়ি ভেঙে দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত‍্যু তিনজনের : শোকস্তব্ধ এলাকা

29th August 2020 11:40 am বর্ধমান
মাটির দোতলা বাড়ি ভেঙে দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত‍্যু তিনজনের : শোকস্তব্ধ এলাকা


বাবু সিদ্ধান্ত ( বর্ধমান ) :  ভগ্নপ্রায় মাটির দোতলা বাড়িতে বসবাস করতো গোটা পরিবার । কয়েকদিনের বৃষ্টিতে আরও দুর্বল হয়ে পড়েছিল সেই মাটির বাড়ি । 
 গভীর রাতে পরিবার সদস্যরা যখন ওই মাটির বাড়িতে ঘুমাচ্ছিলেন তখনই আচমকা বাড়ির একাংশ হড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। ভেঙে পড়া সেই মাটির বাড়ির দেওয়ালের নিচে চাপা পড়ে মৃত্যু হল পরিবারের তিন সদস্যের । মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের  গোবর্ধনপুর গ্রামে । প্রতিবেশী ও পরিজনরা  রাতভর ধ্বংসস্তুপ সরিয়ে মৃতদেহ গুলি উদ্ধার করে । মঙ্গলকোট থানার পুলিশ এই মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে । 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে ,মৃতরা হলেন টগরা বিবি (৬৫), বুড়ি বিবি (৪৫) ও সফিউন্নেসা খাতুন (১২)।  বুড়ি বিবি সম্পর্কে টগরা বিবির মেয়ে । অপর মৃত সফিউন্নেসা সম্পর্কে টগরার নাতনি । এই মৃত্যুর খবর পেয়ে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ গোবর্ধনপুর গ্রামের পশ্চিম মুসলিমপাড়ায় পৌছায় । ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ মৃতদেহ গুলি উদ্ধার করতে পুলিশকে গ্রামবাসীদের প্রবল বাধার মুখে পড়তে হয় । 
তা নিয়ে উত্তেজনা চরমে উঠে । মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করতে না দিয়েই আত্মীয়-পরিজন  ও পাড়ার একাংশ এদিন গ্রামেই মৃতদেহ  সৎকার করে দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে।  মৃতদেহ  উদ্ধারে যাওয়া পুলিশ কর্মীদের গ্রামবাসীরা  এমন ঔদ্ধত্য কিভাবে দেখাতে পারে তা নিয়েও নানা মহল প্রশ্ন তুলেছে ।  এলাকার বাসিন্দাদের কথায় জানা গিয়েছে , টগরা বিবির পরিবার আর্থিক ভাবে দুর্বল ।  ভগ্নপ্রায় একটি মাটির দোতলা বাড়িতেই পরিবারের সবাই মিলে বসবাস করতেন। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে তাঁদের মাটির বাড়ির দেওয়াল আরও দুর্বল হয়েযায় । বিকল্প বাসস্থান না থাকায় বাধ্য হয়ে সেই বাড়িতেই তাঁরা থাকছিলেন ।  রাতে খাওয়া-দাওয়া সেরে টগরা বিবি তাঁর মেয়ে ও নাতনিকে নিয়ে দোতলা মাটির বাড়ির নিচের তলার বারান্দা লাগোয়া একটি ঘরে শুয়ে পড়েন।গভীর রাতে বৃষ্টি শুরু হয়। তখনই দোতলার বারান্দা সহ একটি ঘরের দেওয়াল আচমকাই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে । ঘুমন্ত অবস্থায় ভেঙেপড়া সেই দেওয়ালের নিচে চাপা পড়ে যান টগরা বিবি এবং তাঁর মেয়ে ও নাতনি । ধ্বংসস্তুপে চাপা পড়ে তিন জনেরই মৃত্যু হয় । বরাত জোরে প্রাণে বেঁচেযান  পরিবারের বাকি সদস্যরা । প্রতিবেশী ও পরিজনরাই  সারারাত ধরে ধ্বংসস্তুপ সরিয়ে মৃতদেহ গুলি উদ্ধার করেন । পুলিশ জানিয়েছে, “ ধসে পড়া মাটির দোতলা বাড়ির দেওয়ালের নিচে চাপা পড়ে  ওই গ্রামে একই পরিবারের তিন জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে । ঘটনার তদন্ত চলছে”।





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।